তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ-এর সংজ্ঞা: আল্লাহ তাঁর সকল সৃষ্টিজীবের ইবাদত ও উপাসনা পাওয়ার মালিক, তিনি এককভাবে ইবাদাতের মালিক, তাঁর কোনো শরীক নেই এ স্বীকৃতি দেওয়া।
তাওহীদুল উলূহিয়্যার নামসমূহ:
এ তাওহীদকে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ বা ইলাহিয়্যাহ বলা হয়। কারণ, একনিষ্ঠভাবে তা নিছক তা‘আল্লুহ (تأله) ওপর প্রতিষ্ঠিত। একক আল্লাহর জন্য অধিক ভালোবাসাকে তা‘আল্লুহ বলা হয়।
Table of Contents
নিম্নে বর্ণিত নামগুলো তাওহীদুল উলূহিয়্যার নাম:
Read more….
Marry / বিয়ে করার আগে বিয়ের শর্ত সম্পর্কে জানুন
30+ Best Muslim Dating Sites All time
Relationship | সম্পর্ক ছিন্ন অথবা যুক্ত হওয়া
অর্থসহ মেয়ে শিশুদের ইসলামিক নাম। 500 +
(ক) তাওহীদুল ইবাদাহ বা উবূদিয়্যাহ: কারণ, তা এক আল্লাহর জন্য ইবাদাত নির্ধারিত হওয়ার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
(খ) তাওহীদুল ইরাদা: কারণ, তা আমলের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
(গ) তাওহীদুল কাছদ: কারণ, তা এক আল্লাহর জন্য ইবাদাতকে একনিষ্ঠ অত্যাবশ্যক করে এমন ঐকান্তিক ইচ্ছার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
(ঘ) তাওহীদুত ত্বলাব: কারণ, তা আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠভাবে চাওয়ার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
(ঙ) তাওহীদুল আমল: কারণ, তা আল্লাহ তা‘আলার জন্য আমলকে একনিষ্ঠ করার ওপর প্রতিষ্ঠিত।
‘তাওহীদুল উলুহিয়্যা’-এর হুকুম বা বিধান:
তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ সকল বান্দার ওপর ফরয।
বান্দারা কেবল এর দ্বারাই ইসলামে প্রবেশ করে।
আর এর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস ও আমল করলেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ওপর এ বিশ্বাস এবং এ মোতাবেক আমল করা সর্বপ্রথম ফরয।
আর এর দ্বারাই দাওয়াত ও শিক্ষা শুরু করা সর্বপ্রথম কর্তব্য। যারা এর বিপরীত ধারণা করে তারা এতে মতনৈক্য করেছে।
কুরআন ও হাদীসে এর ফরয হওয়ার নির্দেশ রয়েছে।
আল্লাহ এরই বাস্তবায়নের জন্য সবকিছু সৃষ্টি করেছেন এবং কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿قُلۡ إِنَّمَآ أُمِرۡتُ أَنۡ أَعۡبُدَ ٱللَّهَ وَلَآ أُشۡرِكَ بِهِۦٓۚ إِلَيۡهِ أَدۡعُواْ وَإِلَيۡهِ مََٔابِ ٣٦﴾ [الرعد: ٣٦]
“বল, আমি তো আল্লাহর ইবাদাত করতে ও তাঁর কোনো শরীক না করতে আদিষ্ট হয়েছি। আমি তাঁরই প্রতি আহ্বান করি এবং তাঁরই নিকট আমার প্রত্যাবর্তন”। [সূরা আর-রা‘দ, আয়াত: ৩৬]
তিনি আরো বলেন,
﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [الذاريات: ٥٦]
“আমি সৃষ্টি করেছি জিন্ন এবং মানুষকে এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদাত করবে”। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন,
«إنك تأتي قوماً من أهل الكتاب فليكن أول ما تدعوهم إليه شهادة أن لا إله إلا الله، فإن هم أطاعوك لذلك فأعلمهم أن الله افترض عليهم خمس صلوات في كل يوم وليلة؛ فإن هم أطاعوك لذلك فأعلمهم أن الله افترض عليهم صدقة تؤخذ من أغنيائهم فترد على فقرائهم» الحديث.
“হে মু‘আয, তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছো। সর্বপ্রথম তাদেরকে (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু-) আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য মা‘বুদ নেই- এ দিকে আহ্বান কর। যদি তারা এ দাওয়াত গ্রহণ করে তোমার আনুগত্য করে, তখন তুমি তাদেরকে জানাও যে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের ওপর দিনে-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। যদি তারা তা গ্রহণ করে, তখন তুমি তাদেরকে জানাও যে, আল্লাহ তোমাদের ওপর যাকাত ফরয করেছেন, যা ধনীদের কাছ থেকে নেওয়া হবে এবং দরিদ্রদেরকে দেওয়া হবে”।
এ তাওহীদ যাবতীয় আমলসমূহের মধ্যে অধিকতর উত্তম আমল ও অধিক পাপ মোচনকারী। এ ব্যাপারে ইমাম বুখারী ও মুসলিম সাহাবী ইতবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস বর্ণনা করেছেন,
«فإن الله حرم على النار من قال: لا إله إلا الله يبتغي بذلك وجه الله»
“নিশ্চয় আল্লাহ ঐ ব্যক্তির জন্য জাহান্নামকে হারাম করেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে”।
সমস্ত রাসূলগণের এ কালেমার ওপর ঐকমত্য পোষণ করেছেন: সমস্ত রাসূলগণ তাদের সম্প্রদায়কে কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর দিকে দাওয়াত দানে এবং তা থেকে বিমুখের ভয় প্রদর্শনের ব্যাপারে একমত ছিলেন। যেমন, কুরআন কারীমে অনেক আয়াতে এর বর্ণনা এসেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمَآ أَرۡسَلۡنَا مِن قَبۡلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِيٓ إِلَيۡهِ أَنَّهُۥ لَآ إِلَٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَٱعۡبُدُونِ ٢٥﴾ [الانبياء: ٢٥]
“আমরা তোমার পূর্বে যে রাসূলই প্রেরণ করেছি তাঁর নিকটে এ অহী অবতীর্ণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ নেই, সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদাত কর”। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ২৫]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কালেমার দিকে দাওয়াত দানে নবীদের একমতের এক সুন্দর দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
«الأنبياء إخوة لعلات، أمهاتهم شتى ودينهم واحد»
“নবীগণ একে অপরে বৈমাত্রেয় ভাই ছিলেন। তাঁদের মা ভিন্ন ছিল আর দীন এক ছিল”। সকল নবীদের মূল দীন ছিল একই: তা হলো তাওহীদ, যদিও শরী‘আতের অন্যান্য বিধি-বিধান ভিন্ন ছিল। যেমন, কখনো ছেলে-মেয়ে মায়ের দিক থেকে ভিন্ন হয় আর তাদের পিতা হয় এক।
সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম।
Leave a Reply