লায়লাতুল কদর, যা শব-ই-কদর নামেও পরিচিত, প্রতি বছর রমজানে (নবম ইসলামি মাস) পালন করা হয়। এটি রমজানের শেষ আশরার (10 দিন) বিজোড়-সংখ্যাযুক্ত রাতগুলির একটি। কুরআনে লেখা আছে লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
সারা বিশ্বের মুসলমানরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে কদরের রাত পালন করে। তারা লায়লাতুল কদরে আল্লাহকে খুশি করার জন্য প্রার্থনা করে,
দোয়া করে, কুরআন তেলাওয়াত করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং দান করে। কিছু মুসলিম দেশেও এটি একটি সরকারি ছুটির দিন।
যদিও কদরের রাত রমজানের শেষ আশরার যে কোনো বেজোড়-সংখ্যার রাতের মধ্যে পড়তে পারে, অধিকাংশ লোক বিশ্বাস করে যে এটি সম্ভবত 27 তম রাতে এবং কেউ কেউ বিশ্বাস করে যে 23 তম
রাত সম্ভবত লায়লাতুল কদর। যাইহোক, অনেক মুসলমান রমজানের শেষ আশরার সমস্ত বিজোড়-সংখ্যার রাত প্রার্থনা করে পালন করে।
27 তম রাত (লায়লাতুল কদর) 17 এপ্রিল 2023 সোমবার সূর্যাস্তের পর শুরু হওয়া রাতে পালন করা হবে।
আপনার এলাকায় চাঁদ দেখা অনুযায়ী তারিখ পরিবর্তিত হতে পারে।
আরো পড়ুন……
স্ত্রী সহবাসের ইসলামিক নিয়ম, দোয়া, আগে ওপরে করণীয়
দাড়ি রাখা কি পুরুষদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
নামাজের দোয়া ও সূরা (বাংলা অনুবাদ,অর্থসহ আরবি)
তাহাজ্জুদ নামাজ কিভাবে আদায় করবেন
বাংলাদেশে শব-ই-কদর
লায়লাত আল-কদর, যা শব-ই-কদর, ডিক্রির রাত, পরিমাপের রাত নামেও পরিচিত, এবং ইসলামিক পালন যে রাতের বার্ষিকীকে চিহ্নিত করে ।
লায়লাতুল কদরের শুভেচ্ছা ও বার্তা
- এই বিশেষ রাতে, আমি প্রার্থনা করি যে আল্লাহ আপনাকে ধৈর্য, বিশ্বাস এবং সামনের একটি খুব সুখী জীবন দান করুন।
2. শব-ই-কদরে আল্লাহ আপনার প্রার্থনার উত্তর দিন এবং আপনাকে স্বাস্থ্য, সম্পদ এবং সুখ দিয়ে আশীর্বাদ করুন।
3. আপনি এবং আপনার পরিবার সর্বদা সুখী, সুস্থ, আশীর্বাদ এবং সমৃদ্ধ হোক। শব-ই-কদর মোবারক!
4. লায়লাতুল কদর সবচেয়ে পবিত্র রাতগুলির একটি এবং এটি পালন করার সর্বোত্তম উপায় হল প্রার্থনা ও প্রার্থনা করা।
5. লায়লাতুল কদরের জন্য আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন এবং দয়া করে আমার জন্য দোয়া করতে ভুলবেন না।
6. কদরের রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম এবং এই রাতে আমি প্রার্থনা করি যে আপনি উভয় জগতের কল্যাণ লাভ করেন।
7. লায়লাতুল কদর ঈশ্বরের একটি মহান নিয়ামত এবং আমরা এই রাতটি মসজিদে কাটাতে পেরে ধন্য। আপনার প্রার্থনা আমাদের মনে রাখবেন.
8. লায়লাতুল কদর আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার একটি চমৎকার সুযোগ এবং আমি চাই যে আমরা এটির সর্বোচ্চ ব্যবহার করি।
9. শব-ই-কদর বছরে একবার সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত আসে এবং আল্লাহর অগণিত নিয়ামত নিয়ে আসে। আপনি এবং আপনার পরিবার সবসময় সুখী থাকুন।
লায়লাতুল কদর নামাজের নিয়ম, আমল ও এর ফজিলত
বারটি মাসের মধ্যে ফযিলতপূর্ণ মাস হল রমজান মাস। সিয়াম সাধনার মাস হচ্ছে রমজান। এই মাসে আল্লহ তায়ালা একটি বিশেষ রাত রেখেছেন যে মাসের ইবাদত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম
লায়লাতুল কদরের ফজিলত
শবে কদর বা লাইলাতুল কদর মুসলিম উম্মাহের জন্য অধিক ফযিলতপূর্ণ একটি রজনী। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা আল-কুরআন নাজিল করেছেন। মহান আল্লাহপাক বলেনঃ
নিশ্চয়ই আমি একে (পবিত্র কুরআনকে) নাযিল করেছি শবে কদরে। (সূরা আল-কদর, আয়াত ১)
শবে কদরের ফজিলত ও মহাত্ম সম্পর্কে কুরআন পাকের সূরা আল কদরের বর্ণনাই যথেষ্ট। এ কারণে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কদরের রজনীর ফযিলত সম্পর্কে তেমন কিছু বলেন নাই।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াব হাসিলের উদ্দেশ্যে কদরের রাতে ইবাদত করে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (বুখারী ও মুসলিম)
লায়লাতুল কদরের নামায ও আমল
শবে কদরের নির্দিষ্ট কোন নামায নেই। তবে এ রাতে বেশি করে নফল সালাত ও জিকির করার কথা হাদিসে এসেছে।কদরের এক রাতের ইবাদত এক হাজার মাসের থেকেও উত্তম।
তাই এই রাতটি ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করাই হবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য। হযরত আয়েশা (রা) বলেন:
নবী (স) রমযানের শেষ দশ দিন যিকির ও ইবাদাতের এমন ব্যবস্থা করতেন যা অন্য সময়ে করতেন না। (সহীহ মুসলিম)
এ রাতে বেশী বেশী নামায বন্দেগী, যিকির, তাসবিহ ইত্যাদির প্রেরণা দান করে নবী (স) বলেন:
যখন লায়লাতুল কদর আসে, তখন জিবরাঈল অন্যান্য ফেরেশতাগণের সাথে যমীনে নেমে আসেন
এবং প্রত্যেক ঐ বান্দাহর জন্যে রহমত ও মাগফেরাতের দোয়া করেন যে দাঁড়িয়ে বসে আল্লাহর ইয়াদ ও ইবাদাতে মশগুল থাকে। (বায়হাকী)
শবে কদরে হজরত জিবরাঈল (আ.) ফেরেশতাদের বিরাট একদল নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং যত নারী-পুরুষ নামাজরত অথবা জিকিরে মশগুল থাকে তাঁদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।
শবে কদরের রাতে কি কি আমল করবেন তা দুইভাগে ভাগ করা যেতে পারে। (ক) নফল নামায (খ) দোয়া ও যিকির।
নফল নামায
কদরের রাতে বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করা. বিশেষ করে বিজোড় রাত্রিতে। কমপক্ষে ১২ রাকাত থেকে যত সম্ভব পড়া যায় ততই উত্তম। অনেকে মনে করেন কদরের নামাযের জন্য বিশেষ
নিয়ম বা দোয়া রয়েছে। আসলে বিশেষ কোন নিয়ম নেই। ইশার নামাযের পর থেকে নিয়ে ফযর পর্যন্ত যে নফল নামায পড়া হয়, তাকে বলা হয় কিয়ামুল-লাইল বা তাহাজ্জুদ
যিকির ও তাসবীহ তাহলীল
- ইস্তেগফার করা ।
- দুরুদ শরীফ পাঠ করা।
- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি (অর্থ- হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করাটা আপনি পছন্দ করেন। এ দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করা।
- বেশি করে কুরআন পাঠ করা। (বিশেষ বিশেষ সূরা পাঠ করা। যেমনঃ সূরা আল-কদর, সূরা আল-মুদ্দাসির, সূরা রহমান, সূরা- ইয়াসিন, সূরা ত্ব-হা, সূরা ওয়াকিয়াহ ইত্যাদি)
- অধিক দান-সদকা করা।
- অতীতের সকল গুন্নাহ ও পাপকাজের জন্য লজ্জিত হয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া।
Leave a Reply